Wellcome to National Portal
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ১৬ August ২০১৬

‘জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক জাগরণ’


প্রকাশন তারিখ : 2016-08-14

সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেছেন, বাউল ভাবদর্শন পারে অন্ধকারের শক্তি রুঁখে দিতে।

তিনি আজ ১৪ আগস্ট ২০১৬ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালায় আয়োজিত এক বাউল সমাবেশে এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে ১১ আগস্ট ২০১৬ থেকে জাতীয় চিত্রশালায় শুরু হয়েছে ‘জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক জাগরণ’ শীর্ষক চারদিনব্যাপী লালন ভাবধারার ভাবশিষ্যদের নিয়ে ‘ভাবসঙ্গীত ও সম্মেলন’। এ আয়োজনের শেষদিনে আজ সকালে চিত্রশালায় বিষয়ভিত্তিক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব আক্‌তারী মমতাজ।

অনুষ্ঠানে বাউল সাধক নহির শাহ, বাউল পাগলা বাবুল ও বাউল হৃদয় সাধু বক্তব্য দেন।

সারাদেশ থেকে আগত প্রায় ৩০০ জন বাউল এসময় উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, বাউলের যে দর্শন তা আমাদের জীবনেরই দর্শন, যে দর্শন জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোত্র-পেশার মধ্যে ভেদাভেদ না করে সবাইকে মনুষ্যত্বের আহ্বানে একত্রিত করে। এটি সমগ্র মানবজাতির দর্শন, যার ছায়ায় সব ধর্মের-গোত্রের-সম্প্রদায়ের মানুষ সমাবেত হতে পারে।

তিনি বলেন, মানুষ মানুষে যখন ভালবাসার ঘাটতি হয় তখন শুরু হয় সংকট, ঘটে নানা বিপর্যয় ও ধ্বংস। এ পরিস্থিতির উত্তরণে বাউল ভাবদর্শন পালন করতে পারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। কারণ এ দর্শনের মূল কথা মানুষের প্রতি মানুষের ভালবাসা, বিশ্বাস, শ্রদ্ধা আর সম্প্রীতি।

মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে অন্ধকারের শক্তিগুলো বাংলাদেশে তাদের অপতৎপরতা চালানোর চেষ্টা করছে। তাঁরা ধর্মের নামে মুক্তমনা মানুষ, ব্লগার, লেখক-প্রকাশক, শিল্পী-কবি-সাহিত্যিক, পুরোহিত, ইমাম, বিদেশীসহ নিরীহ মানুষ হত্যা করছে। বিভিন্ন সময়ে দেশের নানা প্রান্তে বাউলদের উপর চালাচ্ছে নির্যাতন। এটি শুধু ব্যক্তি বা গোষ্ঠির উপর হামলা নয়, আমাদের সবার উপর হামলা, মানব জাতির উপর হামলা, আমাদের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের উপর হামলা। এ অপশক্তিগুলোর মোকাবেলায় সবাইকে সম্মিলিতভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে। এক্ষেত্রে বাউল ভাবদর্শন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। কারণ এ ভাবদর্শন মানুষের অন্তরাত্মাকে আলোকিত করে, তাঁকে দেখায় আলো-অন্ধকারের পার্থক্য, তাঁকে শেখায় পাপ-পূণ্যের ভেদাভেদ।

এবারের মতো প্রতিবছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় বাউল সম্মেলন আয়োজনের ব্যাপারে মন্ত্রী অনুষ্ঠানে আশা পোষণ করেন।

বক্তব্যের পরে বাউল সাধক নহির শাহের সাথে সমাবেত সবাই লালন সাঁইয়ের ‘সত্য বল সুপথে চল’ গানটি পরিবেশন করেন।

পরে সংস্কৃতিমন্ত্রীর নেতৃত্বে জাতীয় চিত্রশালা হতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পর্যন্ত ‘জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক জাগরণ’ সম্বলিত ব্যানার, একতারা, দোতারাসহ দেশীয় বাদ্যযন্ত্র নিয়ে লালন সাঁইয়ের গানের তালে তালে বাউলদের পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। সংস্কৃতি সচিব ও শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক এতে অংশগ্রহণ করেন।